Posts

হাওড়ার একমাত্র অক্ষত সেমাফোর টাওয়ার

Image
বছর দুয়েক আগে লিখেছিলাম এটি, আজ এখানে নিজের ব্লগে আবার নতুন করে প্রকাশ করলাম।  হাওড়া আন্দুল মহিয়াড়ি খটির বাজার এলাকার রয়েছে এই সেমাফোর টাওয়ারটি। হাওড়া জেলায় একমাত্র এটিই অক্ষত রয়েছে। তিন রাস্তার মোড়ে অবস্থিত সেই বিখ্যাত সেমাফোর টাওয়ার   সেমাফোর টাওয়ার কবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ও এর কার্যপ্রণালী -------------------------------------------------------------------- সেমাফোর বা অপটিক্যাল টেলিগ্রাফ ছিল টেলিগ্রাম পূর্ব যুগে সব থেকে কার্যকরী যোগাযোগ ব্যবস্থা।  ১৭৯২ সালে ফ্রান্সে ক্লড চ্যাপের হাত ধরে এর সূত্রপাত হয়। এরপরে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে ও এর আকার, আকৃতি ও কার্যপ্রণালী অনেক বার পরিবর্তিত হয়েছে। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত ধরে মোটামুটিভাবে ১৮১৬-১৮৩০ সালের মধ্যে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম থেকে বারাণসীর (বেনারস) চুনার ফোর্ট অব্দি এইরকম অনেকগুলি টাওয়ার গড়ে ওঠে। প্রায় ৭০-৮০ ফুট উঁচু টাওয়ারগুলি মোটামুটিভাবে প্রায় ১৩ কিমি দূরত্বে অবস্থিত ছিল একে ওপরের থেকে। ৬ খানি এইরকম টাওয়ার ছিল হাওড়া ও হুগলি জেলায়, এটি ছাড়াও অন্য জায়গাগুলি হল বড়গাছিয়া, দিলাকাশ (জাঙ্গিপাড়া), হায়...

মনিপুরের মিতেইদের সাথে বাংলার সম্পর্ক

Image
আপনারা সকলেই জানেন যে বেশ কিছুদিন যাবৎ ভারতের উত্তর পূর্বের ছোট রাজ্য মনিপুরে বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে খুব ঝামেলা চলছে, সংঘর্ষে প্রচুর মানুষ মারাও গেছেন। সংঘর্ষে প্রধানত দুইটি উপজাতির নাম সামনে এসেছে, মিতেই বা মেইতেই  এবং কুকি। আজ আলোচনা করবো এই মিতেইদের নিয়েই, প্রসঙ্গত বলি এরাই কিন্তু মনিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ। সংক্ষিপ্ত ইতিহাস  ---------------------- মনিপুরে ভগবান শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর দর্শন প্রথম সপ্তদশ শতাব্দীতে মহান ভক্ত শ্রীল নরোত্তম দাস ঠাকুরের পাঁচ শিষ্য দ্বারা প্রবর্তিত হয়েছিল। শ্রীল নরোত্তম দাস ঠাকুরের গান এখনও মণিপুর জুড়ে গাওয়া হয় এবং তাঁর জন্মদিন এখনো ধুমধাম করে পালিত হয়। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এরপর আসি রাজা ভাগ্যচন্দ্রের কথায়, এনার আমলেই মনিপুরে গৌড়ীয় বৈষ্ণববাদ প্রচারলাভ করে। রাজর্ষি ভাগ্যচন্দ্র ১৭৫৯ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন, কিন্তু ১৭৬২ সালে বার্মিজরা, তার ঈর্ষান্বিত মামার সাথে একত্রে ষড়যন্ত্র করে মণিপুর আক্রমণ করে দখল করে। রাজা তার রানী এবং কয়েকজন পরিচারককে নিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্য অহোমে পালিয়ে যান, যা বর্তমানে আসাম নামে পরিচিত।  অহোমের রাজা রাজেশ্বর রাজা ভাগ্যচ...

ইসকন আয়োজিত কলকাতা রথযাত্রা ২০২৪

Image
এই রথযাত্রা এবার ৫৩ তম বর্ষে পদার্পন করলো, রইলো তারই কিছু ছবি ও তথ্য।  স্থান ------ পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনের উল্টোদিকে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে| কতদিন চলবে ও সময় --------------------------- এখানে রথ থাকবে  ১৪ জুলাই অব্দি, সময় বিকেল ৪ টে থেকে রাত ৯ টা অব্দি। সন্ধ্যা ৬:৩০ নাগাদ সন্ধ্যারতি হয়। রথগুলি_সামনে যাওয়ার পথ রুদ্ধ রথগুলি পার্কিং --------- আউট্রাম রোডের দিকে রথের মেলার গেটের উল্টোদিকেই এনসিসি ক্লাব হাউস, ওয়াইএমসিএ টেন্টের সামনেই দুই ও চার চাকা উভয়ই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।  পূজার ব্যবস্থা ও সময়  -------------------------- বিগ্রহগুলিকে যেখানে রাখা হয়েছে, সেখানেই এক পাশে পূজার ডালা কেনার একটি কাউন্টার করা হয়েছে। দুইরকম ডালা আছে, ২৫১ টাকা ও ৫০১ টাকার।  সময় বিকেল ৪:৩০ থেকে রাত ৮:৩০ অব্দি। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি শ্রীল প্রভুপাদের মূর্তি মূল মণ্ডপের ভিতরে মূল মণ্ডপের ভিতরে অপূর্ব ঝাড়বাতি তুলা দান অনুষ্ঠান ও ভোগ ---------------------- বিগ্রহগুলিকে যেখানে রাখা হয়েছে, তার সামনেই একটি মঞ্চে সারাক্ষন হরিনাম সংকীর্তন হয়|  এর সামনের রাস্তা দিয়ে সোজা ...

হাওড়ার আমতার উদং কালীমাতা আশ্রম

Image
গ্রামীণ হাওড়ার আমতা-১ ব্লকের অন্তর্গত উদং গ্রামে একদম দামোদরের তীরেই শতাধিক বছরের পুরানো এই আশ্রমটি অবস্থিত। আশ্রম চত্বরের পরিবেশ খুবই মনোমুগ্ধকর। আশ্রম চত্বরে রাধা-গোবিন্দের মন্দির  আশ্রম চত্বরে বামদিকে রাধা-গোবিন্দের ও ডান দিকে দক্ষিণা কালীর মন্দির আশ্রম চত্বর আশ্রম চত্বর আশ্রম চত্বর আশ্রম চত্বরে কি কি দেখবেন  ---------------------------------- সব মিলিয়ে চারটি মন্দির আছে এখানে।  ১) মূল মন্দিরটি দেবী দক্ষিণা কালীর।   দক্ষিণা কালীর মন্দির দক্ষিণা কালীর বিগ্রহ ২) পূর্ব দিকে রয়েছে রাধা-গোবিন্দের মন্দির। প্রবেশদ্বারের সামনে থেকে রাধা-গোবিন্দের মন্দির রাধা-গোবিন্দের মন্দির রাধা-গোবিন্দের বিগ্রহ রাধা-গোবিন্দের মন্দিরের ভিতরে অপূর্ব শিল্পকর্ম ৩) দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে মহাদেবের মন্দির।   মহাদেবের মন্দির মহাদেবের বিগ্রহ ও শিবলিঙ্গ ৪) দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে শনিদেবের মন্দির। শনিদেবের মন্দির শনিদেবের বিগ্রহ গঠন শৈলীর দিক থেকে রাধা-গোবিন্দের মন্দিরটি সব থেকে বেশি কারুকার্যমন্ডিত। মন্দির চত্বরে রয়েছে একটি ছোট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। বোরিং এর মাধ্যমে জল তুলে তা পরিশোধন কর...

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বোড়ালের ত্রিপুরসুন্দরী মন্দির

Image
কলকাতার গড়িয়ার খুব কাছেই বোড়ালে অবস্থিত এই বহু প্রাচীন মন্দির খুব কম করে হলেও ৭০০-৮০০ বছরের পুরোনো। এই মন্দির ও সংলগ্ন এলাকার ইতিহাস পাল, সেন যুগের এমনকি তার আগেরও অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে এখানে। অনেকের মতে এই মন্দির দেবীর ৫২ সতীপীঠের একটি, এখানে নাকি দেবীর অঙ্গুলিবিহীন বাম করতালু পতিত হয়েছিল।  মূল মন্দির এই জায়গার ইতিহাস  ------------------------------ এই এলাকা আর মন্দিরের ইতিহাস পাল ও সেন যুগের। এককালে এই দেবীর মন্দিরের পূর্ব সীমা দিয়ে বয়ে যেত আদিগঙ্গা ভাগীরথী, আর দেবীর মন্দির ছিল নদীর পশ্চিমকূলে। সমস্ত বণিকরা তাম্রলিপ্ত বন্দর যাবার পথে এই বোড়ালে নেমে, ত্রিপুরসুন্দরীর পিঠে এসে পূজা ও রাত্রিযাপন করতেন। সেন বংশের কেউ একজন (কথিত আছে বল্লাল সেন) মন্দিরের কাছেই সাড়ে বিয়াল্লিশ বিঘার একটি পুকুর কাটান, যার নাম এখন সেনদীঘি। সেন দীঘি কালক্রমে মুসলমান রাজত্বকালে মগ ও জলদস্যুদের অত্যাচারে, আর ভাগীরথীর শাখা শুকিয়ে গেলে, দেবীপীঠকে কেন্দ্র করে যে সমৃদ্ধশালী জনপদ গড়ে উঠেছিল, সেটা লুপ্ত হয়ে যায়। ধীরে ধীরে মন্দিরও ভগ্নদশা হয়ে যায়। পরবর্তীকালে, সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে, জগদী...