হাওড়ার আমতার উদং কালীমাতা আশ্রম
গ্রামীণ হাওড়ার আমতা-১ ব্লকের অন্তর্গত উদং গ্রামে একদম দামোদরের তীরেই শতাধিক বছরের পুরানো এই আশ্রমটি অবস্থিত। আশ্রম চত্বরের পরিবেশ খুবই মনোমুগ্ধকর।
![]() |
আশ্রম চত্বরে রাধা-গোবিন্দের মন্দির |
![]() |
আশ্রম চত্বরে বামদিকে রাধা-গোবিন্দের ও ডান দিকে দক্ষিণা কালীর মন্দির |
![]() |
আশ্রম চত্বর |
![]() |
আশ্রম চত্বর |
![]() |
আশ্রম চত্বর |
আশ্রম চত্বরে কি কি দেখবেন
----------------------------------
সব মিলিয়ে চারটি মন্দির আছে এখানে।
১) মূল মন্দিরটি দেবী দক্ষিণা কালীর।
![]() |
দক্ষিণা কালীর মন্দির |
![]() |
দক্ষিণা কালীর বিগ্রহ |
২) পূর্ব দিকে রয়েছে রাধা-গোবিন্দের মন্দির।
![]() |
প্রবেশদ্বারের সামনে থেকে রাধা-গোবিন্দের মন্দির |
![]() |
রাধা-গোবিন্দের মন্দির |
![]() |
রাধা-গোবিন্দের বিগ্রহ |
![]() |
রাধা-গোবিন্দের মন্দিরের ভিতরে অপূর্ব শিল্পকর্ম |
৩) দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে মহাদেবের মন্দির।
![]() |
মহাদেবের মন্দির |
![]() |
মহাদেবের বিগ্রহ ও শিবলিঙ্গ |
৪) দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে শনিদেবের মন্দির।
![]() |
শনিদেবের মন্দির |
![]() |
শনিদেবের বিগ্রহ |
গঠন শৈলীর দিক থেকে রাধা-গোবিন্দের মন্দিরটি সব থেকে বেশি কারুকার্যমন্ডিত।
মন্দির চত্বরে রয়েছে একটি ছোট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। বোরিং এর মাধ্যমে জল তুলে তা পরিশোধন করে জারবন্দি করা হয়।
![]() |
ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট |
মন্দির চত্বরের ভিতর দিয়েই চলে যেতে পারেন পাশ ঘেঁষে বয়ে চলা দামোদরের ঘাটে। এখানে বোটিং এর বন্দোবস্ত রয়েছে, আগে ফোন করে কথা বলে নেবেন এই নম্বরে (অমিত মল্লিক-৮৩২৭৬২৪৪১৯)। ঘাটের সামনেই এক কোনে সাবিত্রী-সত্যবান ও ধর্মরাজের একটি ছোট মন্দির আছে।
![]() |
সাবিত্রী-সত্যবান ও ধর্মরাজের বিগ্রহ |
![]() |
এই সেই বোট যাতে চেপে দামোদরের বুকে ঘুরে বেড়ানো যায় |
![]() |
আশ্রম সংলগ্ন দামোদর নদ |
এছাড়াও মন্দির চত্বরে রয়েছে একাধিক খাঁচা, যার মধ্যে রয়েছে অনেক পাখি। এই জায়গাতেই রয়েছে আকুয়ারিয়ামও, যার মধ্যে রয়েছে রং বেরঙের মাছ। বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের জন্য রয়েছে স্লিপ, দোলনা ইত্যাদি।
![]() |
পাখির খাঁচা |
এই মন্দিরের ইতিহাস
--------------------------
দামোদরের ভয়ানক বন্যার কথা আমাদের সবারই জানা। একটা সময় ছিল যখন বন্যার পরে ভাদ্র আশ্বিন মাস নাগাদ খুব মহামারীর উপদ্রব শুরু হতো। এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখানের বাসিন্দারা দামোদরের তীরে শ্মশান সংলগ্ন এই স্থানে মায়ের পূজা শুরু করেন।
এরপর বাংলা ১৩৪৯ সনে দারুন এক ঝড়ে এখানের মূর্তি ও মন্দির দুইই খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এরপর শোনা যায় এক আশ্চর্য ঘটনার কথা। উদং পোদ্দার পাড়ায় স্বর্গীয় দেবেন দত্তের জামাই হুগলি জেলার নন্দপুরের এক বর্ধিষ্ণু পরিবারের বাসিন্দা নবকুমার আর্য্য স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসেন। রাতে ঘুমের মধ্যে মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি পরের দিন ভগ্ন মন্দির দর্শন করতে আসেন। এরপর গ্রামবাসীদের সাথে আলোচনা করে তিনি থালিয়া গ্রামের মদন ও নীলকণ্ঠকে মায়ের মূর্তি তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মন্দিরের জন্য জমি দান করেন ফতেপুর গ্রামের স্বর্গীয় নদেরচাঁদ সাহা ও স্বর্গীয় ভজহরি ঘোষাল।
এরপর বাংলা ১৪১১ সনের শেষের দিকে গ্রামবাসীদের সহায়তায় নতুন ভাবে গড়ে তোলা হয় বর্তমান মন্দির ও মূর্তিগুলি।
বিশেষ উৎসব
----------------
বিশেষ বিশেষ সময় প্রায় সারা বছর জুড়ে আশ্রমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এখানে মূল বাৎসরিক অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রতিবছর শিবরাত্রির দিন। শিবরাত্রির পরের দিন অমাবস্যায় অনুষ্ঠিত হয় দেবীর বাৎসরিক পুজো। আর ঠিক তার পরের দিনই আশ্রমে অনুষ্ঠিত হয় অন্নকূট উৎসব। এইসময় প্রচুর ভক্তসমাগম হয় এখানে।
সময়
-----
ভোর বেলায় ৬ টার সময় মন্দির খোলে, বন্ধ হয় বেলা ১২:৩০ নাগাদ।
আবার বিকেলে ৪ টের সময় মন্দির খোলা হয়, বন্ধ হয় সন্ধ্যা ৭:৩০ নাগাদ।
ভোগ প্রসাদের ও থাকার ব্যবস্থা
-------------------------------------
এখানে আপাতত এসবের কোনো ব্যবস্থা নেই।
কিভাবে আসবেন ও পার্কিং
--------------------------------
হাওড়া বা কলকাতা থেকে বাসে আসলে আমতা গামী বাস ধরুন, আমতা কলাতলা বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছে টোটো/অটো ধরলেই পৌঁছে যাবেন এখানে। যদি বাগনান গামী বাসে ওঠেন তাহলে আপনাকে পৌঁছতে হবে বাগনান বাস স্ট্যান্ডে। সেখান থেকে আমতা গামী বাসে উঠে নামবেন ফতেপুর স্টপেজে, সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বা টোটোয় চড়ে পৌঁছে যাবেন এই আশ্রমে। বাগনান বাস স্ট্যান্ড থেকে ফতেপুরের অটোও পেয়ে যাবেন আপনারা।
হাওড়া থেকে ট্রেনে আসলে আমতা বা বাগনানে নেমে একই ভাবে পৌঁছতে পারেন এখানে।
মন্দিরের প্রবেশ পথের সামনেই পার্কিং (বাইক/স্কুটি-১০ টাকা, চার চাকা-২০ টাকা) এর বন্দোবস্ত রয়েছে। বাইক বা স্কুটি নিয়ে এখানে অনায়াসেই আসতে পারেন কিন্তু সামনের রাস্তা যেহেতু খুব প্রশস্ত নয় তাই চার চাকা নিয়ে আসলেও বড় গাড়ি না নিয়ে আসাই ভালো।
#howrah #amta #udang #udangkalimataashram #westbengal #westbengaltourism
Comments
Post a Comment