Posts

একদিনের ছোট্ট সফরে মগরা-পাণ্ডুয়া-ত্রিবেণী-কুন্তিঘাট

Image
আগের বছর থেকে প্ল্যান ছিল কিন্তু নানান তালেগোলে আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি, অবশেষে সেই সুযোগ এলো ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ এ।  ট্রেন  ----- আমরা সফর শুরু করেছিলাম মগরা স্টেশন থেকে, এটি যেহেতু বর্ধমান মেইন লাইনের একটি স্টেশন, তাই এই লাইনে প্রচুর ট্রেন রয়েছে। আমি আলাদা করে কোনো ট্রেনের কথা উল্লেখ করছিনা। আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল হাওড়া স্টেশন থেকে। হাওড়ায় ফেরার ট্রেন ধরেছিলাম পাণ্ডুয়া স্টেশন থেকে। এটিও বর্ধমান মেইন লাইনের একটি স্টেশন, তাই এই লাইনে প্রচুর ট্রেন রয়েছে।  এদিন যা যা দেখলাম  (ক্রমানুসারে) ---------------------------------------- আমরা সফর শুরু করেছিলাম মগরা স্টেশন থেকে, স্টেশন থেকে বেরিয়ে খানিকটা এগিয়ে গেলেই পেয়ে যাবেন মহানাদ যাওয়ার ম্যাজিক গাড়ি, এছাড়াও এখান থেকে মহানাদ যাওয়ার বাসও পাওয়া যায়। আমরা ম্যাজিক গাড়িতেই গিয়েছিলাম, ভাড়া ২০ টাকা জনপ্রতি। ম্যাজিক গাড়ি মহানাদে যেখানে নামাবে সেটা একটা বাজার এলাকা, সেখান থেকে মাত্র ২ মিনিটের হাঁটা পথেই রয়েছে,   ১) মহানাদ জটেশ্বর শিবমন্দির মহানাদ জটেশ্বর শিবমন্দির জটেশ্বর শিব এরপর আমরা টোটোয় চড়ে পৌঁছোই,  ২) মহানাদ/ব্রহ্মময়ী...

হাওড়ার ডোমজুড়ের নারনা পঞ্চানন/পঞ্চানন্দ মন্দির

Image
হাওড়া জেলার ডোমজুড় ব্লকের অন্তর্গত নারনা গ্রামে এই মন্দিরটি অবস্থিত। শোনা যায়, পঞ্চানন্দের এই মন্দিরটির বয়স নাকি পাঁচশো (মতান্তরে ৮০০) বছরেরও বেশি। গ্রামের পশ্চিম দিকে রয়েছে বিরাট এক অশ্বত্থ গাছ। তার নীচে রয়েছে নারনা পঞ্চানন দেবের মন্দির। মন্দির প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে জনশ্রুতি ও ভক্তদের বিশ্বাস ------------------------------------------------------------- কথিত আছে, তুবারাম (মতান্তরে তুলারাম) ঘোষ নামে এই গ্রামের এক বাসিন্দা পঞ্চানন দেবের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন যে পাশের পুকুরে দেবতা আছেন। পরদিন সকালে তিনি পুকুরে গিয়ে দেখতে পেয়েছিলেন যে, সেখানে একটি ঘট রয়েছে। তিনি সেটিকে তুলে এনেছিলেন। কিন্তু, ঘটটিকে নিয়ে এলে কীভাবে তার পুজো করবেন, সেই ভেবে তিনি চিন্তায় পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত সাত-পাঁচ ভেবে তুবারাম ঘোষ ঘটটিকে আবার পুকুরেই ফেলে দিয়েছিলেন। কথিত আছে, সেই রাতেই তুবারাম ঘোষ ফের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। সেই স্বপ্নাদেশে বলা হয়েছিল, এক অশ্বত্থগাছ রেখে, সেই স্থানে যেন ঘটটির পুজো করা হয়। পুকুরে চাল ধুতে যাওয়ার সময় কয়েকটি চাল দিয়ে পুজো করলেই দেবতা সন্তুষ্ট হবেন। আর, দেবতার আশীর্বাদে একদিন তুবারাম ঘোষের পরি...

হাওড়ার ডোমজুড়ের নারনা কালীবাড়ি

Image
হাওড়া জেলার ডোমজুড় ব্লকের অন্তর্গত নারনা গ্রামে এই কালীবাড়ি অবস্থিত। সুপ্রাচীন এই মন্দির ২৫০ বছরেরও (মতান্তরে ৫০০) বেশি প্রাচীন।  দেবী এখানে কালী রূপে বিরাজমান, কিন্তু দেবী দুর্গা রূপেই পূজিতা হন। এই মূর্তি নাকি বানিয়েছিলেন দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মূর্তির শিল্পী নবীন ভাস্কর, তাই মা ভবতারিণীর মূর্তির সঙ্গে যথেষ্ট মিলও রয়েছে নারনা কালীবাড়ির মূর্তিতে।  মূল মন্দির মূল ফটক সিংহাসনে দেবতা সমাবেশ ----------------------------- একদিকে ছবিতে দেখা যাচ্ছে সিংহের উপর দাঁড়িয়ে মহিষাসুরমর্দিনী। না, দুর্গা নয় মহিষাসুরমর্দিনী হলেও তিনি কালী। অন্য দিকের ছবিতে সিংহের উপর বসে তিনি বধ করছেন হাতিকে। দেখলেই চেনা যায় জগদ্ধাত্রী হিসেবে হাতি রূপী করিন্দ্রাসুর বধের মূর্তি। এছাড়াও সিংহাসনে রয়েছেন রয়েছে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, রামচন্দ্রকে কাঁধে করে হনুমান, জয়া বিজয়া, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক। বিগ্রহ এত দেবতা একসঙ্গে কেন? ------------------------------ একটা সময় ছিল, এই মন্দির আর নিকটবর্তী পঞ্চানন্দ থান ছাড়া গোটা গ্রামে অন্য কোনও দেবতার পুজো নিষিদ্ধ ছিল। গ্রামবাসীদের মনে অন্য দেবতাদের পুজো করার ইচ্ছে...

হাওড়ার বেলুড় রাসবাড়ি

Image
বছর দেড়েক আগে লিখেছিলাম এটি, আজ, রাসপূর্ণিমার শুভ দিনে, এখানে নিজের ব্লগে আবার নতুন করে প্রকাশ করলাম। বেলুড় মঠের সন্নিকটে হুগলি নদীর তীরেই অবস্থিত এটি। সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ------------------- কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত দাঁ পরিবারের নাম আপনারা সবাই শুনেছেন আশাকরি। এই পরিবারের সব থেকে বিখ্যাত ব্যক্তি হলেন স্বর্গীয় শ্রী শিবকৃষ্ণ দাঁ মহাশয়। ওনার পুত্র স্বর্গীয় শ্রী পূর্ণচন্দ্র দাঁ মহাশয় ও তাঁর মাতা স্বর্গীয়া শ্রীমতী কাদম্বিনী দাসী কর্তৃক ১৮৯০ খ্রীষ্টাব্দের জুন মাসে প্রতিষ্ঠিত (বাংলার ১২৯৭-এর ২১ জ্যৈষ্ঠ) এই মন্দির। কি কি দেখবেন ------------------ এখানে মূল আকর্ষণ শ্রীশ্রী রাধারমন জিউ-র ৪০ ফুট উঁচু নবরত্ন মন্দির। এছাড়াও এখানে রয়েছে ২৪ ফুট উঁচু ৬টি আটচালা শিবমন্দির, রাসমঞ্চ, নাটমন্দির, ভোগঘর, ক্লক টাওয়ার, নহবতখানা ইত্যাদি।  ক্লক টাওয়ার রাসমঞ্চ শিব মন্দির ও নহবতখানা নাটমন্দির মূল মন্দিরের সাথে দক্ষিণেশ্বর ভবতারিণী কালী মন্দিরের সাদৃশ্য রয়েছে,যদিও উচ্চতায় কম। মন্দিরের সামনের অংশ,মেঝে,সিঁড়ি সব শ্বেতপাথরে মোড়া। মন্দিরের গর্ভগৃহে অধিস্থান করছেন শ্রী শ্রী রাধারমন জীউ।কাঠের কারুকার্যমন্ডিত সিংহাসন...

হাওড়ার একমাত্র অক্ষত সেমাফোর টাওয়ার

Image
বছর দুয়েক আগে লিখেছিলাম এটি, আজ এখানে নিজের ব্লগে আবার নতুন করে প্রকাশ করলাম।  হাওড়া আন্দুল মহিয়াড়ি খটির বাজার এলাকার রয়েছে এই সেমাফোর টাওয়ারটি। হাওড়া জেলায় একমাত্র এটিই অক্ষত রয়েছে। তিন রাস্তার মোড়ে অবস্থিত সেই বিখ্যাত সেমাফোর টাওয়ার   সেমাফোর টাওয়ার কবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ও এর কার্যপ্রণালী -------------------------------------------------------------------- সেমাফোর বা অপটিক্যাল টেলিগ্রাফ ছিল টেলিগ্রাম পূর্ব যুগে সব থেকে কার্যকরী যোগাযোগ ব্যবস্থা।  ১৭৯২ সালে ফ্রান্সে ক্লড চ্যাপের হাত ধরে এর সূত্রপাত হয়। এরপরে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে ও এর আকার, আকৃতি ও কার্যপ্রণালী অনেক বার পরিবর্তিত হয়েছে। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত ধরে মোটামুটিভাবে ১৮১৬-১৮৩০ সালের মধ্যে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম থেকে বারাণসীর (বেনারস) চুনার ফোর্ট অব্দি এইরকম অনেকগুলি টাওয়ার গড়ে ওঠে। প্রায় ৭০-৮০ ফুট উঁচু টাওয়ারগুলি মোটামুটিভাবে প্রায় ১৩ কিমি দূরত্বে অবস্থিত ছিল একে ওপরের থেকে। ৬ খানি এইরকম টাওয়ার ছিল হাওড়া ও হুগলি জেলায়, এটি ছাড়াও অন্য জায়গাগুলি হল বড়গাছিয়া, দিলাকাশ (জাঙ্গিপাড়া), হায়...