সপ্তাহান্তে একদিনের ছোট্ট সফরে বর্ধমান
আগের বছর থেকে প্ল্যান ছিল কিন্তু নানান তালেগোলে আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি, অবশেষে সেই সুযোগ এলো ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ এ।
এদিন যা যা দেখলাম (ক্রমানুসারে)
----------------------------------------
বর্ধমান স্টেশন থেকে আমাদের এদিনের সফর শুরু হয়েছিল। টোটোয় চড়ে (ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা) প্রথমেই গিয়েছিলাম,
১) ১০৮ শিবমন্দির (দুপুরে ১২-৪ বন্ধ থাকে)
![]() |
শিবমন্দিরগুলি |
![]() |
শিবমন্দিরগুলি |
![]() |
প্রবেশদ্বার |
![]() |
মন্দির চত্বর |
![]() |
মন্দির চত্বরে ১০৮ টি ঘন্টা |
![]() |
মন্দির চত্বরে |
![]() |
মন্দির চত্বরে |
![]() |
মন্দির চত্বরের জলাশয় |
এরপর টোটোয় চড়ে (ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা) গিয়েছিলাম,
২) সাধক কমলাকান্ত কালীবাড়ি (দুপুরে ১২:৩০-৪ বন্ধ থাকে)
![]() |
সাধক কমলাকান্ত কালীবাড়ি |
![]() |
সাধক কমলাকান্ত কালীবাড়ির মায়ের বিগ্রহ |
![]() |
সাধক কমলাকান্ত কালীবাড়িতে শিব লিঙ্গ |
![]() |
সাধক কমলাকান্ত কালীবাড়িতে লক্ষী গণেশের বিগ্রহ |
এরপর টোটোয় চড়ে (ভাড়া জনপ্রতি ১৫ টাকা) গিয়েছিলাম,
৩) মা সর্বমঙ্গলা মন্দির (দুপুরে ১-৪ বন্ধ থাকে)
![]() |
মা সর্বমঙ্গলার মন্দির |
![]() |
মা সর্বমঙ্গলার বিগ্রহ |
![]() |
মা সর্বমঙ্গলার মন্দিরে প্রবেশ করেই রয়েছে এই দুই শিব মন্দির |
![]() |
নাট মন্দির |
![]() |
মা সর্বমঙ্গলার মন্দির চত্বরে রামেশ্বর শিব মন্দির |
![]() |
মা সর্বমঙ্গলার মন্দির চত্বরে মিত্রেশ্বর শিব মন্দির |
![]() |
মা সর্বমঙ্গলার মন্দির চত্বরে কমলেশ্বর শিব মন্দির |
৪) মা অন্নপূর্ণা শ্রী শ্রী ধনেশ্বরী লক্ষী মন্দির (এটি একদম মা সর্বমঙ্গলার মন্দিরের পাশেই অবস্থিত, মন্দির বন্ধের সময় মা সর্বমঙ্গলা মন্দিরের মতোই)
![]() |
শ্রী শ্রী ধনেশ্বরী লক্ষী মন্দির |
![]() |
ধনেশ্বরী লক্ষী মায়ের বিগ্রহ |
এরপর এখান থেকে একটি টোটো রিজার্ভ করে (ভাড়া ১০০ টাকা) আমরা পরপর দুইটি জায়গায় গিয়েছিলাম, সেগুলি হলো ক্রমান্বয়ে,
৫) বর্ধমানেশ্বর মন্দির
![]() |
বর্ধমানেশ্বর শিব |
৬) মা কঙ্কালেশ্বরী মন্দির (দুপুরে ২-৪ বন্ধ থাকে)
![]() |
মা কঙ্কালেশ্বরী মন্দির |
![]() |
মা কঙ্কালেশ্বরী |
![]() |
মা কঙ্কালেশ্বরী মন্দির চত্বরে পঞ্চানন শিব মন্দির |
![]() |
মা কঙ্কালেশ্বরী মন্দির চত্বরের জলাশয় |
![]() |
মা কঙ্কালেশ্বরী মন্দির চত্বরের জলাশয়ের মাঝে |
![]() |
মা কঙ্কালেশ্বরী মন্দিরের প্রবেশদ্বার |
৭) নবাব বাড়ি/খাজা আনোয়ার শাহ বেড় সমাধিস্থল
![]() |
নবাব বাড়ি চত্বর |
![]() |
নবাব বাড়ি চত্বরে |
![]() |
নবাব বাড়ি চত্বরে থাকা মসজিদ |
![]() |
নবাব বাড়ি চত্বরে |
![]() |
খাজা আনোয়ার শাহ বেড় সমাধিস্থল |
এরপর নিকটবর্তী সৌদামিনী মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে কিঞ্চিৎ জলযোগ সেরে আমরা টোটোয় চড়ে (ভাড়া ১৫ টাকা জনপ্রতি) গিয়েছিলাম,
৮) কুতুবউদ্দিন ও শের আফগানের সমাধিস্থল
![]() |
কুতুবউদ্দিন ও শের আফগানের সমাধিস্থল |
![]() |
কুতুবউদ্দিন ও শের আফগানের সমাধি |
![]() |
কুতুবউদ্দিন ও শের আফগানের সমাধিস্থলে |
![]() |
কুতুবউদ্দিন ও শের আফগানের সমাধিস্থলের পাশেই রয়েছে এই বিশাল জলাশয় |
![]() |
সমাধিস্থলে প্রবেশের মুখেই রয়েছে এই সুড়ঙ্গপথ |
এখান থেকে আমরা ক্রমান্বয়ে হেঁটে গিয়েছিলাম বর্ধমান রাজবাড়ী বা ইউনিভার্সিটি, সেখান থেকে কৃষ্ণ সায়র পার্ক ও সেখান থেকে ফাইনালি টোটোয় চড়ে গিয়েছিলাম চিড়িয়াখানা সংলগ্ন বিজয়নন্দেশ্বর শিবমন্দির দেখতে, কিন্তু সেটি বন্ধ ছিল। এগুলি নিয়ে দুই একটি কথা আমি নিচে আলাদাভাবে মেনশন করেছি।
এরপর গোলাপবাগ থেকে আমরা একটি পাবলিক বাসে চড়ে এসে পৌঁছাই আমাদের এদিনের শেষ গন্তব্যে,
৯) কার্জন গেট
![]() |
কার্জন গেট |
![]() |
কার্জন গেটের সামনেই রয়েছে মহারাজ বিজয়চাঁদ মহাতাবের মূর্তি |
এইখানেই আমাদের এদিনের ভ্রমণের ইতি। এরপর বর্ধমান স্টেশনে চলে এসে হাওড়াগামী ফেরার ট্রেন ধরেছিলাম।
রুট ম্যাপ/ট্যুর প্ল্যান
------------------------
বর্ধমান স্টেশনটাকে স্টার্টিং পয়েন্ট ধরে ম্যাপটা একটু স্টাডি করলে বুঝবেন নবাবহাটের ১০৮ শিব মন্দির এবং কাঞ্চন নগরের মা কঙ্কালেশ্বরী মন্দির এগুলি একে ওপরের সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে এবং একটু আউটস্কার্টসে অবস্থিত। তাই মন্দির বন্ধ হওয়ার টাইমগুলো আর ম্যাপটাকে মাথায় রেখে প্ল্যান করবেন। আমরা কোনো সময়ই একটা প্রপার অর্ডার ফলো করতে পারিনা মন্দিরগুলির কারণে, বাধ্য হয়ে তাই একটু উল্টো পাল্টা দৌড়াদৌড়ি করতে হয়।
আমরা যে জায়গাগুলি দেখিনি/দেখতে পারিনি
------------------------------------------------------
ওপরে উল্লেখিত জায়গাগুলি ছাড়াও বর্ধমানে ঘোরার মতো আরো বেশ কিছু জায়গা আছে, যার কিছু আমরা ইচ্ছে করেই বাদ দিয়েছি এবং কিছু দেখতে পারিনি, সেগুলির তালিকা এখানে দিলাম।
১) কল্পতরু চিলড্রেন্স পার্ক
(সঙ্গে বাচ্চা কাচ্চা থাকলে যেতে পারেন তবে বিশাল কিছু আহামরি জায়গা নয়।)
২) বর্ধমান রাজবাড়ী বা ইউনিভার্সিটি
(আমরা যেহেতু উইকেন্ডে গিয়েছিলাম তাই ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারিনি, ভিতরে পুরোনো বিশাল বিশাল বিল্ডিংগুলি ছাড়া একটি মিউজিয়াম রয়েছে, দেখতে চাইলে সোম থেকে শুক্রবারের মধ্যে সরকারি ছুটি বাদ দিয়ে কাজের দিনে যাবেন।)
৩) কৃষ্ণ সায়র পার্ক
(ভিতরে রাজাদের আমলের একটি বহু পুরোনো দীঘি রয়েছে, সেদিকে কেন্দ্র করে একটি পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে, প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা জনপ্রতি। আমরা এটি স্বেচ্ছায় বাদ দিয়েছি, কলকাতার ইকো পার্কের সমান প্রবেশ মূল্য দিয়ে ঢুকে সেরকম কিছুই দেখার মতো নেই এখানে। আপনারা চাইলে ঘুরে আসতেই পারেন।)
৪) বর্ধমান সাইন্স সেন্টার
(কলকাতায় সাইন্স সিটির একটি মিনি ভার্সন বলতে পারেন এটিকে। তাই ওটি দেখা থাকলে স্বচ্ছন্দে এটিকে বাদ দিতে পারেন।)
৫) রমনাবাগান ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি/ বর্ধমান জুলজিক্যাল পার্ক
(সঙ্গে বাচ্চা কাচ্চা থাকলে যেতে পারেন তবে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানার মতো ওতো ভ্যারাইটি আশা করবেন না।)
৬) বিজয়নন্দেশ্বর শিবমন্দির
(এটি চিড়িয়াখানার একদম পাশেই অবস্থিত, কিন্তু এখন বিশেষ পূজার দিনগুলি ছাড়া বছরের বাকি সব দিনে এটি বন্ধই থাকে।)
৭) হাওয়া মহল
(এটি বর্ধমান ইউনিভার্সিটির গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের ভিতরে অবস্থিত, নিয়ম ঐ মূল ক্যাম্পাসের মতোই। আমরা যেহেতু উইকেন্ডে গিয়েছিলাম তাই ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারিনি, দেখতে চাইলে সোম থেকে শুক্রবারের মধ্যে সরকারি ছুটি বাদ দিয়ে কাজের দিনে যাবেন।)
৮) খ্রাইস্ট চার্চ
(১৮১৬ সালে অবস্থিত এই চার্চটি কার্জন গেটের সন্নিকটেই অবস্থিত, আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন এটি বন্ধ ছিল। প্রতি রবিবার সকালে এবং ক্রিসমাসের সময় এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।)
![]() |
খ্রাইস্ট চার্চ |
৯) গোবিন্দ ধাম
(কড়চা কবি গোবিন্দ দাসের জন্ম হয়েছিল এখানে। দুপুরে ১২-৪ এই মন্দিরটি বন্ধ থাকে। কাঞ্চন নগরে মা কঙ্কালেশ্বরী মন্দির থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে অবস্থিত এটি, হেঁটেই ঘুরে আসতে পারেন। আমরা গিয়ে পৌঁছানোর আগেই এটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো তাই বিগ্রহ দর্শন করতে পারিনি।)
![]() |
গোবিন্দ ধাম |
মিষ্টির/লস্যির দোকান
--------------------------
বর্ধমান শুনলেই আমাদের মাথায় আসে সীতাভোগ, মিহিদানার কথা। প্রধানত তিনটি মিষ্টির দোকান এখানে নাম করা,
১) গণেশ মিষ্টান্ন ভান্ডার
২) রাধাবল্লভ মিষ্টান্ন ভান্ডার
৩) সৌদামিনী মিষ্টান্ন ভান্ডার
এক প্রখ্যাত ইউটিউবারের রিভিউ শুনে আমরা শুধু সৌদামিনীতেই গিয়েছিলাম, টুক টাক খাবার দাবারের পাশাপাশি সব থেকে দামি GI সীতাভোগ (৬০০ টাকা কেজি) ট্রাই করেছিলাম, কোয়ালিটি ভালো ছিল তবে আউট অফ দ্য ওয়ার্ল্ড গোছের নয়।
এর পাশাপাশি কার্জন গেটের পাশেই রয়েছে এক বিখ্যাত লস্যি ও শরবতের দোকান (এখানে এনাদের নিজেদের বানানো কেকও পাওয়া যায়),
৪) রামপ্রসাদের শরবত ও লস্যি
#weekendtrip #weekendtripfromkolkata #tourplan #bardhaman #westbengal #westbengaltourism
Comments
Post a Comment